বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন (PR) পদ্ধতির প্রবর্তন এবং ব্যর্থ নির্বাচন কমিশন বাতিলের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর উদ্যোগে শুক্রবার (৩ নভেম্বর ২০২৩) দুপুর ২টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
দুপুর ২টা থেকে মহাসমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ভোর থেকেই সারাদেশের নেতা-কর্মীরা রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হতে থাকে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে মহাসমাবেশে জনতার ঢল নামতে থাকে। এতে মহাসমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত হয়। ধারণা করা হচ্ছে আজকে ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশে লক্ষাধিক লোকের জনসমাগম হয়েছে। এদিকে মহাসমাবেশটি দলটির ভেরিফাইড ফেইসবুক পেইজ থেকে লাইভ করা হয়; যেখানে দেখা গেছে ১ লক্ষেরও অধিক অডিয়েন্স সরাসরি সক্রিয় দেখা গেছে।
ক্ষমতাসীন সরকারের পদত্যাগ; একদফা আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিএনপির পাশাপাশি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশও দফায় দফায় বড়বড় কর্মসূচি পালন করে আসছে।
আজকের মহাসমাবেশে সভাপতির ভাষণ প্রদান করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই)।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মহাসমাবেশে অন্যান্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপ্যাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম (শায়খে চরমোনাই), মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান ও ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ ও মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলমসহ নেতৃবৃন্দ।
জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে এবং অবৈধ সরকারের পতনের লক্ষে বিএনপিসহ বিরোধীদলসমূহের সকল শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির প্রতি সমর্থন ঘোষণা করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। তিনি মহাসমাবেশ থেকে ৪ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এসব দাবি মেনে না নিলে আন্দোলনরত সকল বিরোধীদলের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তিতে কঠোর ও বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
মহাসমাবেশে ঘোষিত ৪ দফা কর্মসূচি:
১. ১০ নভেম্বর ২০২৩-এর মধ্যে সরকারকে পদত্যাগ করে এবং জাতীয় সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে সকল নিবন্ধিত এবং প্রতিনিধিত্বশীল আন্দোলনরত রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
২. বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে রাজনৈতিক কারণে কারারুদ্ধ সকল ওলামায়ে কেরাম, বিএনপিসহ সকল শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে মুক্তি দিয়ে, রাষ্ট্রপতিকে সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জাতীয় সংলাপের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
৩. সরকার এসব দাবি মেনে না নিলে আন্দোলনরত সকল বিরোধীদলের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তিতে কঠোর ও বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
৪. জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে এবং অবৈধ সরকারের পতনের লক্ষে বিএনপিসহ বিরোধীদলসমূহের সকল শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির প্রতি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সমর্থন ঘোষণা করছে।