সরকার পতনসহ এক দফার চূড়ান্ত আন্দোলনে যাচ্ছে বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। এ লক্ষ্যে আজ বুধবার রাজধানীতে ‘কয়েক লাখ লোকের’ জমায়েত ঘটিয়ে বড় ধরনের সমাবেশের মাধ্যমে শক্তি প্রদর্শনের প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি। বেলা ২টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠেয় এ সমাবেশ থেকে যুগপৎ বৃহত্তর গণআন্দোলন গড়ে তুলতে একদফার যৌথ ঘোষণা দেবে দলটি।
এই সমাবেশ থেকে একদফা ছাড়াও ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্র মেরামতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, এ নিয়ে ৩১ দফাও ঘোষণা করার কথা রয়েছে।
এ দিন প্রায় একই সময়ে রাজধানীর ১৩ স্থান থেকে একই ঘোষণা দেবে ৩৭টি সমমনা রাজনৈতিক দল ও জোট এবং সংগঠন।
বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, যুগপৎ আন্দোলনের যৌথ ঘোষণা’ ও এক দফার’ যাত্রার দিনটিকে তাৎপর্যপূর্ণ করতে সমাবেশে লক্ষণীয় উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চান দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। ঢাকা মহানগরের বাইরে এই সমাবেশে সাভার, কেরানীগঞ্জ, দোহার, নবাবগঞ্জ ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নরসিংদীসহ ঢাকার আশপাশের জেলা থেকেও নেতা-কর্মীরা সমাবেশে অংশ নেবেন।
গতকালই ঢাকা মহানগর পুলিশ ২৩ শর্তে বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে। বহু বছর পর সমাবেশের জন্য ঢাকায় মাইকে প্রচার চালানোর সুযোগ পেয়েছে দলটি।
বিএনপির ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ বলেন, আমরা আশা করছি, স্মরণকালের বৃহত্তর সমাবেশ হবে নয়াপল্টনে।’
দলীয় সূত্র জানায়, লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এই সমাবেশের পরিকল্পনা এবং সব সাংগঠনিক প্রস্তুতি সভা তদারকি করেন। সমাবেশ সফল করতে ঢাকা মহানগর বিএনপিসহ যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের শীর্ষ নেতাদের বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন।
নয়াপল্টনের সমাবেশের আগের দিন গতকাল ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রশ্ন তোলেন, বিদেশি পর্যবেক্ষকেরা বাংলাদেশে আসেন কেন? অন্য দেশে তো তারা যান না। নিজেই প্রশ্ন তুলে নিজেই এর জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেন, কারণ এখানে (বাংলাদেশে) গণতন্ত্র নেই। এখানে নির্বাচন হয়নি, এখানে নির্বাচন হয় না।
গতকাল সকালে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের নারী প্রতিনিধিদের প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল যখন এ কথা বলছিলেন, তখন তার পাশে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের (ডিআই) প্রতিনিধি ডানা এল ওল্ডস।
বিএনপির পাল্টা আওয়ামী লীগের সমাবেশের উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা কর্মসূচি দিচ্ছি, কর্মসূচি চলছে। এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি। এই কর্মসূচির বিরুদ্ধে তথাকথিত শান্তি সমাবেশ’, শান্তি মিছিল’ নামে পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছে তারা, যা সংঘাতের দিকে ঠেলে দেওয়া ছাড়া আর কিছু নয়।’
সরকারের পদত্যাগকে এক দফা’ হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে আন্দোলনের নতুন যাত্রা শুরু করতে শরিক দলগুলোর সবাই ঐকমত্যে পৌঁছেছে।